March 14, 2025, 1:23 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :

ট্রাম্প-জেলেনস্কি কথোপকথোন

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
পরিস্থিতি এমন দিকে যাওয়ার আগে কেউই ভাবেনি এমনটা হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হয়তো আশা করেছিলেন, হোয়াইট হাউস থেকে একটি সফল আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ফিরবেন। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে একদমই ভিন্ন ঘটনা। বিশ্ব মিডিয়ার সামনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন। তারা দাবি করেন, বছরের পর বছর যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সহায়তার জন্য তাকে আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডায় শেষ হয়েছে বৈঠক। হয়নি চুক্তিও। সৌজন্যমূলক ত্রিশ মিনিটের কথোপকথনের পর মূল আলোচনবা শুরুর ১০ মিনিটেই শেষ হয়ে যায় এ আলোচিত বৈঠক।
জেলেনস্কি-ভ্যান্স বিতর্ক চরমে/
শুরুতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ কূটনীতির মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটাই করছেন।
জেলেনস্কি তখন রাশিয়ার আগ্রাসনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, কেউ তাকে থামায়নি। জেলেনস্কি সরাসরি প্রশ্ন করেন, কীসের কূটনীতি, জেডি? আপনি কী বোঝাতে চাইছেন?
এতেই উত্তেজনা তীব্র হয়ে ওঠে। ভ্যান্স পাল্টা জবাব দেন, এমন কূটনীতি যা আপনার দেশের ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করবে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট তখন জেলেনস্কিকে ‘অসম্মানজনক’ আচরণের জন্য অভিযুক্ত করেন এবং বলেন, তিনি ওভাল অফিসে বসে আমেরিকার সামনে ‘তর্ক’ করছেন।
‘আমরা কী অনুভব করবো তা আপনি নির্ধারণ করতে পারেন না’
ভ্যান্স ইউক্রেনের সামরিক ও নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যার প্রসঙ্গ টেনে আনলে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধের সময় প্রত্যেকেরই সমস্যা থাকে, এমনকি আপনাদেরও। তবে আপনারা এখন তা অনুভব করছেন না, কিন্তু ভবিষ্যতে করবেন।
এই মন্তব্যে ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হন এবং সরাসরি আলোচনায় অংশ নেন।
ট্রাম্প কঠোরভাবে বলেন, আমরা কী অনুভব করবো তা আপনি বলতে পারবেন না। আপনি এটা নির্ধারণ করতে পারবেন না। আপনার হাতে কোনো শক্তি নেই এখন। আপনি লাখ লাখ মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলছেন।
‘আপনারা একা ছিলেন না’ ট্রাম্পের প্রত্যুত্তর
এক পর্যায়ে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধের শুরু থেকেই আমরা একা ছিলাম এবং আমরা কৃতজ্ঞ।
ট্রাম্প এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, আপনারা একা ছিলেন না। আপনাদের একা রাখা হয়নি। আমরা আপনাদের ৩৫০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছি, যা এই নির্বোধ প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন। ট্রাম্প তখন বাইডেনকে ইঙ্গিত করে কথাটি বলেন।
ভ্যান্স এরপর প্রশ্ন তোলেন, জেলেনস্কি কি এই বৈঠকের সময় যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন? তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মার্কিন নির্বাচনের সময় বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন।
জেলেনস্কির প্রতিক্রিয়া— ‘কিন্তু কী মূল্যে?’
ট্রাম্প বলেন, এইভাবে ব্যবসা করা খুব কঠিন হবে। মানসিকতার পরিবর্তন না হলে চুক্তি করা কঠিন হবে।
ট্রাম্প ও ভ্যান্স স্পষ্টভাবে জেলেনস্কির মনোভাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ভ্যান্স জেলেনস্কিকে বলেন, শুধু ধন্যবাদ বলুন।
জেলেনস্কি যুক্তি দিতে থাকেন, কারণ মুহূর্তটি ছিল তার দেশের জন্য অস্তিত্বের লড়াই। তিনি তিন বছর ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রধান ক্যামেরার বাইরে আরেকটি দৃশ্য ছিল। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওকসানা মারকারোভাকে দেখা যায় মাথা নিচু করে হতাশার চিহ্ন প্রকাশ করতে।
সে মুহূর্তটিতে স্পষ্ট হয়, এক বিশাল কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে জেলেনস্কির ইউক্রেন।
জেলেনস্কি যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা ইউরোপে প্রশংসনীয় হলেও এর মূল্য হতে পারে তার শক্তিশালী মিত্রকে হারানো। ট্রাম্পের বিরুদ্ধাচরণ করার মানে হতে পারে, শেষ পর্যন্ত পুতিনের সামনে আরো দুর্বল হয়ে পড়া।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net